গোবিন্দচন্দ্র দেব ঃ
গোবিন্দচন্দ্র (১৯০৭-১৯৭১) দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ। প্রকৃত নাম
গোবিন্দচন্দ্র দেবপুরকায়স্থ। ১৯০৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলার বিয়ানী
বাজারের লাউতা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। দেবের পূর্বপুরুষ ছিলেন ভারতের গুজরাটের
বাসিন্দা এবং কুলীন। দেব ১৯২৯ সালে কলকাতার সংস্কৃত কলেজ থেকে দর্শন বিষয়ে বি.এ
(সম্মান) এবং ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে এম.এ ডিগ্রি লাভ করে
অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি ‘রিজন, ইনটুইশন অ্যান্ড রিয়ালিটি’
নামক অভিসন্দর্ভ রচনা করে ১৯৪৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ
করেন। কিছুকাল দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজে অধ্যাপনা করে তিনি ১৯৫৩ সালে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে যোগদান করেন। দর্শনে বিশিষ্ট অবদানের জন্য ১৯৬৭ সালে
দেবকে সম্মানসূচক ‘দর্শন সাগর’ উপাধিতে ভূষিত করে। একই বছর তাঁর মানবতাবাদী দর্শন
প্রচারের জন্য আমেরিকায় ‘দি গোবিন্দ দেব ফাউন্ডেশন ফর ওয়ার্ল্ড ব্রাদারহুড’
প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে গোবিন্দদেব দর্শন
গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাঁকে
মরণোত্তর ‘একুশে পদক’ প্রদান করে। মানবকল্যাণ সাধনায়, সত্য, সুন্দর ও ন্যায়
প্রতিষ্ঠায়, মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে, সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের
জন্য এবং অসাম্প্রদায়িক ও মানবতাবাদী দর্শন প্রচারের জন্য চিরকুমার দেব তাঁর সব
সম্পত্তি ও অর্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দান করেন। ১৯৬৫ সালের পাকভারত যুদ্ধের সময়
তাঁকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পাকিস্তানে নিজ জীবন বিপন্ন হতে পারে
জেনেও তিনি দেশত্যাগ করেননি; এমনকি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গেও তিনি
একাত্মতা ঘোষণা করেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকবাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনে
তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের গণকবরে তাঁর মরদেহ
সমাহিত করা হয়।
মুনির চৌধুরী ঃ
মুনির চৌধুরী (১৯২৫-১৯৭১) শিক্ষাবিদ, নাট্যকার,
সাহিত্যসমালোচক। ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর মানিকগঞ্জ শহরে তাঁর জন্ম। তাঁর পৈতৃক নিবাস
নোয়াখালী জেলায়। পিতা খানবাহাদুর আবদুল হালিম চৌধুরী ছিলেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
১৯৪১ সালে মুনীর চৌধুরী ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস
করেন। তারপর আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আই.এস.সি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে ইংরেজিতে বি.এ অনার্স (১৯৪৬) ও এমএ (১৯৪৭) পাস করেন। ১৯৫৪ সালে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বাংলায় এবং ১৯৫৮ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
ভাষাতত্ত্বে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। মুনীর চৌধুরী খুলনার ব্রজলাল কলেজ (বি এল
কলেজ)-এ অধ্যাপনার (১৯৪৭-৫০) মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ
(১৯৫০) এবং শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ও বাংলা বিভাগে (১৯৫০-৭১)
অধ্যাপনা করেন। মুনীর চৌধুরী শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে বামপন্থী রাজনীতি ও প্রগতিশীল
সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঢাকার প্রগতি লেখক ও শিল্পী সংঘ,
কমিউনিস্ট পার্টি, ভাষা আন্দোলন ইত্যাদির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। বাঙালি
সংস্কৃতিতে শ্রদ্ধাশীল মুনীর চৌধুরী সংস্কৃতির ওপর কোন আঘাতকে সহ্য করেননি। ১৯৬৭
সালে পাকিস্তান সরকার রেডিও-টেলিভিশনে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার বন্ধের নির্দেশ দিলে
তিনি তার প্রতিবাদ জানান। পরের বছর সংস্কারের নামে বাংলা বর্ণমালা বিলোপের উদ্যোগ
নেওয়া হলে তিনি তারও প্রতিবাদ করেন। মুনীর চৌধুরী সাহিত্যচর্চায় কৃতিত্ব অর্জন
করেন মূলত প্রগতি লেখক ও শিল্পীসংঘের সঙ্গে যুক্ত থাকা অবস্থায়। তার প্রধান আকর্ষণ
ছিল নাটকের প্রতি। মুনীর চৌধুরী মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র মাধ্যমে
নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা ও সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। তাঁর একটি বিশেষ কীর্তি
বাংলা টাইপ রাইটারের কি-বোর্ড (১৯৬৫) উদ্ভাবন, যা ‘মুনীর অপটিমা’ নামে পরিচিত। তিনি
নাটকে বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬২) ও দাউদ পুরস্কার (১৯৬৫) লাভ করেন। ঢাকার
থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠী তাঁর স্মরণে মুনীর চৌধুরী সম্মাননা (১৯৮৯) পদক প্রবর্তন করে।
১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের দুদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর তিনি পাকবাহিনীর
সহযোগীদের দ্বারা অপহূত ও নিহত হন।
সিরাজুদ্দীন হোসেন ঃ
সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন
১৯২৯ সালের ১লা মার্চ মাগুরা জেলার শালিখা থানার শরুশুনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর বাবা মৌলবী মাযহারুল হক ও মা আশরাফুন্নেসা। সিরাজুদ্দীন হোসেন ১৯৪৭ সালে
ছাত্রাবস্থায় দৈনিক আজাদে সাংবাদিকতা শুরু করেন। পরে তিনি দৈনিক আজাদের বার্তা
সম্পাদক হন। ১৯৫৪ সালে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে বার্তা সম্পাদক পদে যোগ দেন। ১৯৭০ সালে
দৈনিক ইত্তেফাকের কার্যনির্বাহী সম্পাদক নিযুক্ত হন। তিনি কোনদিন শাসক শ্রেণির কাছে
আত্মসমর্পন করেননি। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি স্তরে তাঁর যুক্ততা ছিল। কলম সচল
ছিল প্রতিটি ক্ষেত্রেই।তিনি ছিলেন আগাগোড়া অসাম্প্রদায়িক একজন মানুষ। তাই অনেকের
মতো তাঁকেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর ঘাতকের টার্গেটে পরিণত হতে
হয়েছিল। অনুসন্ধানী রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে জনকের ভূমকিায় ছিলেন সিরাজুদ্দীন হোসেন।
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় ইত্তেফাকের সংবাদ পরিবেশনা ছিল অসাধারণ। এরই
ধারাবাহিকতায় একাত্তর সালটি ছিল সিরাজুদ্দীন হোসেনের রাজনৈতিক সাংবাদিকতার
উজ্জ্বলতম অধ্যায়। সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের সমর্থনে
ইত্তেফাকের মিশন জার্নালিজম আজ ইতিহাস। আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরে শেখ মুজিবুর
রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সঠিক পরামর্শ দিয়েছেন সিরাজুদ্দীন। ১ মার্চ যখন
ইয়াহিয়া’র বেতার ভাষণে পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করার ঘোষণা এলো, তারপর থেকেই
ইত্তেফাকে প্রকাশিত হতে থাকলো একের পর এক জ্বালাময়ী রিপোর্ট। সিরাজুদ্দীন এসব
রিপোর্টের শিরোনামগুলো এমনভাবে লিখতেন যেগুলো মানুষের আন্দোলনকে আরো বেশী বেগবান
করে তুলেছিল। তার লেখা উল্লেখযোগ্য শিরোনামগুলোর মধ্যে রয়েছে-“বিক্ষুব্ধ নগরীর ভয়াল
গর্জন”, “আমি শেখ মুজিব বলছি”এবং “জয় বাংলার জয়”। মুক্তিযোদ্ধাদের মাধ্যমে বারবার
তিনি প্রবাসি সরকারের কাছে গোপন তথ্য পাঠিয়েছেন। বিশেষ করে এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে
মার্কিন কনস্যুলেট প্রধান আর্চার ব্লাডের রিপোর্টটি তিনি গোপনে তাজউদ্দীন আহমদের
কাছে পাঠিয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগ নিয়ে তার একটি অনবদ্য বই আছে ‘লুক ইন্টু
দ্যা মিরর’। ১৯৭১ সালের ১০ই ডিসেম্বর রাজাকার-আলবদর বাহিনী তাঁকে শান্তিনগর
চামেলীবাগের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
শহীদুল্লাহ্ কায়সার ঃ
শহীদুল্লাহ্ কায়সার (১৯২৭-১৯৭১) কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক, লেখক।
১৯২৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর
প্রকৃত নাম আবু নাঈম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। পিতা মাওলানা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ছিলেন
ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও লেখক জহির রায়হান তাঁর
অনুজ। পান্না কায়সার তাঁর সহধর্মিণী। শহীদুল্লাহ কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে
অর্থনীতিতে অনার্সসহ বিএ (১৯৪৬) পাস করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
অর্থনীতিতে এমএ শ্রেণিতে অধ্যয়ন করেন, কিন্তু চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক ধারার সকল আন্দোলনের সঙ্গে
তিনি যুক্ত ছিলেন। ১৯৫১ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিউনিস্ট পার্টির
সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন-এ তিনি অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা পালন করেন
এবং ৩জুন গ্রেফতার হয়ে প্রায় সাড়ে তিন বছর কারাভোগ করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি পুনরায়
গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন। ১৯৫৮ সালের ১৪ অক্টোবর সামরিক শাসক কর্তৃক তিনি পুনরায়
গ্রেফতার হন এবং প্রায় চার বছর কারাভোগের পর ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে মুক্তি লাভ
করেন। ১৯৪৯ সালে ঢাকার সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকায় শহীদুল্লার সাংবাদিক জীবন
শুরু হয়। ১৯৫৮ সালে তিনি সংবাদ পত্রিকায় সহযোগী সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন এবং
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন; এখানেই তাঁর সাংবাদিকতা ও সাহিত্যকর্মের
গৌরবময় অধ্যায় রচিত হয়। শহীদুল্লা কায়সারের প্রধান উপন্যাস সারেং বউ (১৯৬২)-এ
মানুষ ও তার অস্তিত্বের সংগ্রামের কথা বর্ণিত হয়েছে। তাঁর কাম্য ছিল সুস্থ ও
পরিশীলিত জীবনভিত্তিক একটি উন্নত সমাজ।সারেং বৌ-এর কাহিনী অবলম্বনে উন্নত মানের
একটি চলচ্চিত্র এবং সংশপ্তক অবলম্বনে একটি জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল নির্মিত হয়েছে।
শহীদুল্লা সাহিত্যকর্মের জন্য আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬২) এবং বাংলা একাডেমী
পুরস্কার (১৯৬২) লাভ করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পূর্ব
মুহূর্তে ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার বাসভবন থেকে তিনি অপহূত হন এবং আর ফিরে আসেন নি।
জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতাঃ
১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জুলাই বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায়
জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস ছিল বাংলাদেশের বরিশাল জেলার বানারীপাড়ায়।
তাঁর বাবার নাম কুমুদচন্দ্র গুহঠাকুরতা এবং মাতার নাম সুমতি গুহঠাকুরতা। তাঁর পিতা
পেশায় ছিলেন স্কুল শিক্ষক। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে তিনি
প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে আইএসসি-তে
ভর্তি হন। এক বছর সেখানে পড়াশোনা করার পর টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে তিনি পরীক্ষায়
অংশগ্রহণে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে তিনি সেখান থেকে ময়মনসিংহে চলে আসেন এবং
ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে আই.এ.-তে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে
আই.এ. পাশ করেন। এরপর তিনি ইংরেজি বিষয়ে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৯৪২
খ্রিষ্টাব্দে তিনি বি.এ. (সম্মান) বা স্নাতক, এবং ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে এম.এ. ডিগ্রি
লাভ করেন। ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে গুরুদয়াল কলেজে প্রভাষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে ইংরেজি
বিভাগের লেকচারার পদে ছিলেন। এরপর ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি
বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেলোশিপ নিয়ে
তিনি লন্ডন যান। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি লন্ডন কিংস কলেজ থেকে পি.এইচ.ডি. ডিগ্রি
লাভ করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ঢাকাতে যে গণ হত্যা
চালায়, সে সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে আবাসিক শিক্ষক হিসেবে
দায়িত্বপালন করছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী সৈন্যরা তাঁকে তাঁর বাসা থেকে ধরে
এনে, সিঁড়ির গোড়ায় দাঁড় করিয়ে গুলি করে। তাঁর পিঠে ও গলায় গুলি লেগেছিল। মৃত ভেবে
সৈন্যরা সেখানেই তাঁকে ফেলে রেখে চলে যায়। পড়ে তাঁকে সেখান থেকে তুলে বাসার ভিতরে
আনা হয়। আহত অবস্থায় কয়েকদিন বাসায় ছিলেন। কারণ এই সময় তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া
সম্ভব হয় নি। ২৭ মার্চ তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে
ডাক্তার-নার্সবিহীন অবস্থায় একরকম বিনা চিকিৎসায় ৩০ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।
(তথ্যঃনেটের বিভিন্ন উৎস হতে সংগৃহীত) তথ্য সংগ্রহেঃফারিয়া জামান,শিক্ষার্থী,যশোর
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

Comments
Post a Comment