![]() |
| যবিপ্রবির ক্যাফেটেরিয়ার সামনে থেকে তোলা ছবি |
ফরিদ হাসান,যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(যবিপ্রবি) প্রধান প্রবেশদ্বারের পশ্চিম দিকে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংলগ্ন হয়ে অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যাফেটেরিয়াটির।দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যাফেটেরিয়ার টয়লেটগুলো একেবারেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।একরকম জরাজীর্ণ ও অপরিষ্কার অবস্থায় রয়েছে টয়লেটগুলো।ফলে ভোগান্তির শিকার শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসা অতিথিরা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানফটকের সামনে অবস্থিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা অতিথিরা এবং শিক্ষার্থীরা ক্যাফেটেরিয়াটিতে খাওয়া-দাওয়া করা, গল্প ও আড্ডা দেয়া এবং প্রয়োজনে টয়লেট ব্যবহার করেন। টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়ে সকলেই বিপাকে পড়েন।টয়লেটগুলো অপরিষ্কার অবস্থায় থাকায় প্রচন্ডরকমের র্দুগন্ধ ছড়ায় এবং এগুলোর ফ্লাশ,দরজা এবং বেসিনগুলোর বেশির ভাগই নষ্ট ও নোংরা।ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় সকলকেই অন্যত্র টয়লেট ব্যবহারের জন্য যেতে হয়।
সম্প্রতি যবিপ্রবির ৪র্থ সমাবর্তনে অংশ নিতে আসা সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকেরা ক্যাফেটেরিয়ার অব্যবস্থাপনা ও অপরিষ্কার টয়লেট নিয়ে নানা বিরুপ মন্তব্য করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।দুইতালা বিশিষ্ট যবিপ্রবির এই ক্যাফেটেরিয়াতে রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটও।তাছাড়া বসার জন্য চেয়ার টেবিলের সংকট থাকায় খুব বেশি মানুষের জন্য এটিতে জায়গা সংকুলান হয়না ।অন্যদিকে,ক্যাফেটেরিয়াটির খবারের মান ও দাম নিয়েও শিক্ষার্থীদের মাঝে রয়েছে অসন্তোষ।যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের হোটেল, দোকান ও ক্যাফেতে একই খাদ্যপণ্যের মূল্য কম রাখা হচ্ছে সেখানে ক্যাফেটেরিয়াতে মূল্য বেশি নেয়া হচ্ছে।এসব কারনে শিক্ষার্থীদের সমাগম ক্যাফেটেরিয়াতে খুবই কম।তাই একরকম বাধ্য হয়েই বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বাইরের হোটেলগুলোতে খাওয়া-দাওয়া করেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ক্যাফেটেরিয়াটিকে বর্তমান মালিকের নিকট ভাড়া দেয়া হয়েছে গেল প্রায় সাত-আট বছরের বেশি সময় এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় হচ্ছে ঠিকই তবে শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ও খাবারের বিষয়টি নিশ্চিত হচ্ছে না। এটির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনায় দেখা দিয়েছে অপারগতা ও অসন্তোষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেশদর্পনকে যবিপ্রবির রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রাশেদ খান জানান,"কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার ওয়াশরুমের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে অভিযোগ অনেক পুরোনো। ওয়াশরুমের বর্তমান কিছু স্থিরচিত্র আছে, সেগুলো ফেসবুক পেইজ বা গ্রুপগুলোতে এক্সপোজ করতে রুচিতে বাঁধে৷ বেসিনের ট্যাপ নষ্ট, লাইট নষ্ট, পানি জমে থাকে, আর টয়লেটগুলো কখনো পরিষ্কার করা হয় না, যার ফলে টয়লেটের দুর্গন্ধ ক্যাফেটেরিয়ার মধ্যেও চলে আসে! কনভোকেশনের আগেও ছাত্রছাত্রীরা যবিপ্রবির বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে এব্যাপারে অভিযোগ তুলেছিলো, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, কোনো পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত পল্লব নামের এক শিক্ষার্থী বলেন,"ক্যাফেটেরিয়াতে খাবারের দাম বেশি,বাসি খাবার দেয় সাধারণত গরম করা খাবার দেয়,ফ্যানগুলো অচল, মাঝে মাঝে ব্যবহার ও খারাপ করে, রান্না ঘরে শুধু পোকা আর গন্ধ, খাবার পানি কোথা থেকে নিয়ে আসে তারাই ভালো জানেন।বাতরুমে তো পানি থাকেই না সাথে লাইট নাই বিশ্রী গন্ধ, বমি আসে আর বাথরুমের ময়লা ফ্লোরে ভেসে বেড়ায়।"
ফারিয়া নামের স্নাতকের আরেক শিক্ষার্থী বলেন,"ক্যাফেটেরিয়ার ফ্যানগুলো নামে মাত্র এগুলো তেমন ঘুরে না ঘুরলেও বাতাস লাগে না,আর টয়লেটে আলোর ব্যবস্থা নেই তাছাড়া টয়লেট তো কখনও পরিষ্কারই করে না,বেসিনের কল নষ্ট,রান্নাঘরে অপরিষ্কার অবস্থা লাইট ও নাই।"স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আকাশ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন," আমার মনে হয় দৃশ্যমান জায়গায় খাবারের মূল্য তালিকা টানিয়ে দেয়া উচিত এতে সকলের জন্য সুবিধা। তাছাড়া ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মূল্য বাইরের দোকানগুলো থেকে বেশি এটা সমন্বয় করা উচিত।"
ক্যাফেটেরিয়া তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রকৌশল দপ্তর থেকে প্রধান প্রকৌশলী প্রফেসর ড.আনিসুর রহমান জানান,আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে ক্যাফেটেরিয়ার ওয়াশরুম,লাইট,ফ্যানসহ যেসকল সমস্যা আছে তার একটি তালিকা তৈরি করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।ওয়াশরুমের নষ্ট হয়ে যাওয়া ফ্লাশ,বেসিনের ট্যাপ, নষ্ট দরজা অতি দ্রুত মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করার আশ্বাস দেন তিনি।ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের নিম্ন মান ও উচ্চ মূল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এ বিষয়টি তাদের দায়িত্ব নয় যিনি ক্যাফে পরিচালনা করেন এটি তার দেখার বিষয়।এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই।
এসময় উপস্থিত দায়িত্বে থাকা আরেক প্রকৌশলী জানান, কয়েকমাস আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরের টয়লেটগুলোর নষ্ট হয়ে যাওয়া ট্যাপ,বেসিন,দরজা ইতিমধ্যেই তারা লাগিয়েছেন।প্রয়োজনে
আবারও খোঁজখবর নিয়ে কোনকিছু নষ্ট হয়ে গেলে তা ঠিক করে দেয়া হবে।এছাড়া বিভিন্ন ফ্লোরের সুপেয় পানির কল ঠিক করাসহ প্রয়োজনে নতুন পানির কল লাগিয়ে দেয়া হবে যেন শিক্ষার্থীরা পানির কষ্ট না পান।

Comments
Post a Comment