ফরিদ হাসান,যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
ফিজিওথেরাপি পেশার সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে বেগবান করার লক্ষ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উদ্যোগে দেশের প্রথম জাতীয় পর্যায়ে ফিজিওথেরাপি অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়েছে।
যবিপ্রবি'র ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের (পিটিআর) 'বিপিএ স্টুডেন্টস উইংস অব জাস্ট' ও 'জাস্ট ফিজিও' ক্লাবের সার্বিক সহযোগিতায় মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকাল তিনটায় সারা দেশব্যাপী প্রথমবারের মতো উক্ত ফিজিওথেরাপি অলিম্পিয়াড অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়।
বিকাল ৩ টা থেকে ৩টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত ৫০ টি এমসিকিউ প্রশ্নে অলিম্পিয়াডের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অলিম্পিয়াডে সমগ্র দেশ থেকে অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অন্তত দুই শতাধিক ফিজিওথেরাপি শিক্ষার্থী এবং ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক তিনটি ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণ করেন।
আজ ১৪ ই সেপ্টেম্বর বিপি স্টুডেন্টস উইংস অব জাস্ট নামক ফেসবুক গ্রুপে উক্ত অলিম্পিয়াডের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। অলিম্পিয়াডের বিজয়ীরা হলেন 'এ'ক্যাটাগরিতে প্রথম আল আমিন(যবিপ্রবি), দ্বিতীয় তাসফিয়া তাবাসসুম (বিএইচপিআই), তৃতীয় মরিয়ম তাসনিম (নিটোর) এবং ক্যাটাগরি' বি' তে প্রথম হয়েছেন যৌথভাবে মো: মানিক (যবিপ্রবি) ও মো: মহিউদ্দিন নুরী আনাস(বিএইচপিআই) দ্বিতীয় সানজিদা হোসেন সায়মা (বিএইচপিআই) ও তৃতীয় মো: সাকিব আহাম্মেদ(যবিপ্রবি)। সর্বশেষ ক্যাটাগরি 'সি' তে প্রথম হয়েছেন যৌথভাবে মাসুম বিল্লাহ (বিএইচপিআই)ও সাইফুল ইসলাম(বিএইচপিআই) দ্বিতীয় সাহিদ আফ্রিদি(বিএইচপিআই) এবং তৃতীয় তোফাজ্জল হোসেন তুহিন(যবিপ্রবি)।
অলিম্পিয়াড প্রসঙ্গে ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক
ডা. মোঃ ফিরোজ কবীর বলেন,আমি সবসময় স্বপ্ন দেখতাম কিভাবে ফিজিওথেরাপি পেশার উন্নয়নে কাজ করা যায়।ফিজিওথেরাপি অলিম্পিয়াড আয়োজনের স্বপ্ন দেখতাম যেন সকল পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের একই সাথে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণমূলক কাজে সম্পৃক্ত করা যায়। মূলত এটাই ছিল আমার লক্ষ্য।আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এর সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ এ ধরনের জাতীয় পর্যায়ের একটি অলিম্পিয়াড সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।আমি আশা করি আগামীতেও ফিজিওথেরাপি পেশার উন্নয়নে এ ধরনের প্রোগ্রাম ও প্রতিযোগিতার আয়োজনে বাংলাদেশের ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশনসহ (বিপিএ) দেশ-বিদেশের পেশাসংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী,পেশাজীবী ও সকল শুভাকাঙ্ক্ষী সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
অন্যদিকে এ বিষয়ে যবিপ্রবির ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত হলো জাতীয় ফিজিওথেরাপি অলিম্পিয়াড। তিনটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত অলিম্পিয়াডের ক্যাটাগরি এ ও বি ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য এবং সি ছিল সদ্য পাশকৃত ও ফিজিওথেরাপী পেশাজীবীদের জন্য। অত্যন্ত সুন্দর ও সফলভাবে প্রোগ্রামটি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা আশা করি এরকম অলিম্পিয়াড প্রতি বছরই আরো বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে। আমি বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের সকল কার্যনির্বাহী সদস্য, সহভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাদের এই প্রোগ্রামের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করার জন্য। পাশাপাশি একটি কথা না বললেই নয়, ফিজিওথেরাপি অলিম্পিয়াড এর স্বপ্নদ্রষ্টা ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ডাক্তার মোঃ ফিরোজ কবীর স্যারকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। এছাড়া স্যারের সুদূর চিন্তাধারা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে ও আমাদের বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এ প্রোগ্রামটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া আমি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি আমাদের বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান ড.অভিনু কিবরিয়া ইসলাম স্যারকে যার সার্বিক সহযোগিতায় প্রোগ্রামটি সফল হয়েছে। আমরা আশা করি যে, ফিজিও থেরাপি পেশা, গবেষণা ও এ ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ও ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ একসাথে করে যাবে ।
উল্লেখ্য, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার তুলে দেয়া হবে বলে জানান অলিম্পিয়াড কমিটি।ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত এবং বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন এর সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় এই অলিম্পিয়াড ইতিমধ্যে সারা দেশব্যাপী ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অলিম্পিয়াড আয়োজক কমিটি আগামীতে আরও ব্যাপক পরিসরে অলিম্পিয়াড আয়োজনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি পরবর্তীতে এরকম আরও সুদূরপ্রসারী অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য সকল ফিজিওথেরাপি শিক্ষার্থী এবং ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের সাহায্য এবং সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান।

Comments
Post a Comment